সুযোগ নিচ্ছে যানজটের
স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ায় টানা পার্টির সদস্যরা ফের সক্রিয়। কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না ওদের অপ-তৎপরতা। প্রতিদিনই ওদের খপ্পড়ে পড়ে তেল-মাছসহ বিভিন্ন মালামাল খোয়া যাচ্ছে বাজার ফেরত মানুষের। শহরের সাতমাথা এলাকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে টানা পার্টির বিশাল নেটওয়ার্ক।
প্রকাশ্য দিন দুপুরে রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন থেকে মালামাল টেনে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে ওরা। আজ রোববার (১৯ মে) দুপুর একটার দিকে টানা পার্টির এক সদস্য সাতমাথা গোল চত্তর এলাকায় এক ব্যক্তির একটি মোটরসাইকেলের হুকের সাথে রাখা ৫ লিটার সোয়াবিন তেল ভর্তি একটি জারকিন নিয়ে পালিয়ে য়ায়।
এ সময় ওই ব্যক্তি বাজার থেকে ওই পরিমাণ বসুন্ধরা সোয়াবিন তেল কিনে তার মোটরসাইকেলের হুকের সাথে বেঁধে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথিমধ্যে সাতমাথা গোল চত্তরে এসে তিনি যানজটে আটকা পড়েন। এই সুযোগে টানা পার্টির সদস্যরা তার মোটরসাইকেল থেকে ওই তেলের জারকিন খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু তার পিছু ধাওয়া করেও তাকে আর আটক করতে পারেনি জনতা।
এ দিকে, একই দিন বেলা ৩ টার দিকে সাতমাথা মুজিব মঞ্চের সামনে এক নারী টানা পার্টির কবলে পড়েন। এ সময় টানা পার্টির এক সদস্য তার হাত থেকে একটি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দেয়। পরে লোকজন পিছু ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে ওই নারীর কাছে ফিরিয়ে দেয়। এবং টানা পার্টির ওই সদস্যকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকেও সাতমাথা এলাকায় বাজার ফেরত এক ব্যক্তি টানা পার্টির খপ্পরে পড়েন। এ সময় তিনিও মোটরসাইকেলের হুকে সাথে ব্যাগে সাড়ে ৪ কেজি একটি বোয়াল মাছ নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। কিন্তু সাতমাথা গোল চত্তরে তিনি যানজটে আটকা পড়েন। আর এই সুযোগে টানা পার্টির এক সদস্য মোটরসাইকেলের হুকে ব্যাগে রাখা ওই বোয়াল মাছটি ছোঁ দিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আর তাকে ধরা যায়নি।
উল্লেখ্য, শহরের সাতমাথা ও তার আশপাশ এলাকায় প্রতিদনই এ রকম ঘটনা ঘটছে অহরহ। কিন্তু দেখার কেউ নাই। পুলিশ নির্লিপ্ত। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিশু-কিশোরসহ টানা পার্টির প্রায় অর্ধশত সদস্য সক্রিয়। টানাপার্টির কাজ হলো, রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান অন্যান্য গাড়ি থেকে ব্যাগ ভর্তি মালামাল টেনে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া।
বিশেষ করে শহরে যানজটে পড়া রিকশা বা ভ্যান থেকে সবচেয়ে বেশি মালামাল টেনে নিয়ে সটকে পড়ে টানাপার্টির সদস্যরা। রিকশা ও গাড়ি থেকে মালমাল নামিয়ে নিয়ে চোখের পলকে উধাও হয়ে যায় ওরা। একটু অন্যমনস্ক হলেই ওরা ছোঁ দিয়ে মালামাল বোঝাই ব্যাগ বা পাত্র টেনে নিয়ে দৌড় দেয়। পরে পিছু ধাওয়া করেও ওদের আর খোঁজ মেলে না।
তবে কিছ কিছুু সময় দু’একজন ধরাও পড়ে। এ সময় তারা গণধোলাইয়ের শিকার হলেও মালামাল ফেরত পাওয়া যায়না। হাত বদলের মাধ্যমে সেই মালামাল আগেই পার হয়ে যায় ওদের ঠিকানায়। শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় এ রকম ঘটনা বেশি ঘটছে। এ ছাড়া কবি নজরুল ইসলাম সড়কে, রাজা বাজারের সামনে ও ফতেহ আলী বাজার মোড়ে, চেলোপাড়া এলাকাতেও এ ধরণের ঘটনা ঘটে চলেছে।
এ ব্যাপারে বগুড়া সদর থানার ওসি মো: সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, টানা পার্টির সদস্যদের ধরতে সদর ফাঁড়ির পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাস খানেক আগেও টানাপর্টির বেশ কয়েকজন গ্রেফতার করা হয়। তবে তারা জামিনে জেল থেকে বের হয়ে এসে ফের পুরানো পেশায় ফিরে গেছে। তাদের ধরতে আবার গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।